প্রকাশিত: Sat, Mar 16, 2024 12:00 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 3:24 AM

[১]আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর, ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর দাফন সম্পন্ন, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর শোক

সুজন কৈরী: [২] বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শুক্রবার বিকেলে শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে। সকাল ৮টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।  

[৩] গোলাম আরিফ টিপুর বড় মেয়ে ডালিয়া নাসরিন বলেন, বাবার বয়স ৯২ পার হয়ে ৯৩ এ পড়েছিল। বয়সজনিত নানা জটিলতায় তিনি দীর্ঘদিন কষ্ট পাচ্ছিলেন। 

[৪] একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

[৪.১] শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, গোলাম আরিফ টিপুর মৃত্যু দেশের আইন অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাষ্ট্রপতি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

[৪.২] শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মরহুম গোলাম আরিফ টিপুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও গুণগ্রাহীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

[৫] গোলাম আরিফ টিপুর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি গোলাম আরিফ টিপুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।

[৬] শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে গোলাম আরিফ টিপুর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিপুলসংখ্যক আইনজীবী জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শুক্রবার দুপুর সোয়া তিনটায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সম্পন্ন হয়। এরপর তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা, প্রসিকিউটররা, তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন লিয়াজোঁ অফিসের কর্মকর্তারা। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

[৭] দীর্ঘদিনের কর্মস্থল থেকে তার মরদেহ পল্টনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তি ভবনে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সর্বস্তরের জনতার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

[৮] ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন গোলাম আরিফ টিপু। ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন মূলত তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজশাহী কলেজে দেশের প্রথম শহীদ মিনারও তৈরি হয় তারই নেতৃত্বে। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

[৯] ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গোলাম আরিফ টিপু। তার বাবা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব